প্রিন্ট এর তারিখঃ সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

টানা বৃষ্টিতে জামালপুরের ইসলামপুরে ডুবে গেলো শত শত একর ধানক্ষেত..

ইসলামপুর প্রতিনিধি

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় টানা দুই-তিন দিনের অবিরাম বৃষ্টিপাতে বিশাল এলাকা পানির নিচে চলে গেছে। এতে কয়েকশ একর আমন ধানক্ষেত নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় পড়ে হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা।

ইসলামপুর পৌর এলাকার নিচু অংশসহ সদর, কুলকান্দী, পাথর্শী ও চিনাডুলি ইউনিয়নের প্রায় ৫০০ একরেরও বেশি জমি বর্তমানে বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত। মাত্র কিছুদিন আগে রোপণ করা আমন ধানের চারাগুলো এখন পচে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

পাথর্শী ইউনিয়নের গামারিয়া মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, চারপাশে শুধু পানিই পানি। মুখশিমলা গ্রামের কৃষক মকবুল হোসেন জানান, “আমি দুই বিঘা জমিতে আমন ধান রোপণ করেছিলাম। সার, কীটনাশক সব দিয়েছি। গাছও সবুজ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে সব গাছ তলিয়ে গেছে, পচন শুরু হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করায় এই বিপর্যয়। দ্রুত পানি সরানো না হলে পুরো ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।”

একই গ্রামের কৃষক ডবলু মিয়া বলেন, “ধান তো শেষ, কিস্তি তুলে যে মাছের চাষ করেছিলাম, সেগুলোও ভেসে গেছে। এখন কিস্তির টাকা শোধ করবো কীভাবে?”

পাঁচবাড়িয়া এলাকার কৃষক তানজিরুল ইসলাম রানা আক্ষেপ করে বলেন, “গত বছর আলুর চাষ করে কোনো লাভ হয়নি। এবার আগাম জাতের ধান লাগালাম। অথচ এক মাসও যেতে না যেতেই পানিতে তলিয়ে গেল।”

কুলকান্দী ইউনিয়নের মেজবাহুল ইসলাম বলেন, “এ মাঠের ফসল জীবনে কখনো এভাবে পানিতে তলাতে দেখিনি। সড়কের পাশে পানি চলাচলের পথগুলো বন্ধ করে দেওয়ার কারণেই আজকের এই অবস্থা। দুই দিন ধরে ধান ডুবে আছে, অথচ পানি সরানোর উদ্যোগ কেউ নিচ্ছে না।”

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফয়সল জানান, শুধু গামারিয়া নয়, ইসলামপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানের ফসলি জমি পানির নিচে গেছে। তিনি বলেন, “এ বিষয়ে উপজেলা সমন্বয় কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিতে কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত পানি নেমে গেলে ক্ষতির পরিমাণ তেমন বেশি হবে না।”

তবে কৃষকদের দাবি, যদি দ্রুত পানি না সরানো হয়, তাহলে তাদের ব্যাপক লোকসান গুনতে হবে। সেই সঙ্গে নতুন করে চারা রোপণ ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না। এ অবস্থায় সরকারের জরুরি পদক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

প্রিন্ট করুন