সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শেরপুরে তীর্থ উৎসবে মোমের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠে গারো পাহাড়

মোঃ শরিফ উদ্দিন বাবু, শেরপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:১৮ পিএম
শেরপুরে তীর্থ উৎসবে মোমের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠে গারো পাহাড়

default

শেরপুরের নালিতাবাড়ীর বারমারী সাধু লিওর খ্রিষ্টান ধর্মপল্লীতে দুইদিনব্যাপী ফাতেমা রাণীর তীর্থ উৎসব খ্রীষ্টযাগের (প্রার্থনা) মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে।
‘আশার তীর্থযাত্রা; ফাতেমা রাণী মা মারিয়া, বারমারী’ মূল সুরে তীর্থ উৎসবে অংশ নেন প্রায় ত্রিশ হাজার দেশি-বিদেশি রোমান ক্যাথলিক খ্রীষ্টভক্ত। এর মূল আকর্ষণ হলো আলোর শোভাযাত্রা, যা মোমের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠে গারো পাহাড়।
ময়মনসিংহ ধর্মপল্লীর পালপুরহিত বিশপ পনেন পল কুবি সিএসসি জানিয়েছেন, ১৯৪২ সালে ফাদার মার্কস বারমারী মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৮ সালে ময়মনসিংহ ধর্ম প্রদেশ বারমারী মিশনকে ধর্মপল্লী হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর থেকে পর্তুগালের ফাতেমা নগরীর আদলে ফাতেমা রাণীর তীর্থস্থান স্থাপন করা হয়। প্রতি বছর অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহের বৃহস্পতি ও শুক্রবার এই ক্যাথলিক তীর্থ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এবারও আশার তীর্থযাত্রাকে মূল সুরে উদযাপন করা হয়েছে। তিনি জেলা প্রশাসন ও পুলিশের সহায়তার জন্য বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
বিশ্ব মানবতার কল্যাণ, বিশেষ করে বাংলাদেশের শান্তি ও সকল সমস্যার সমাধানের জন্যও এবারের তীর্থযাত্রায় প্রার্থনা করা হয়েছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে শেরপুরের নালিতাবাড়ীর গারো পাহাড়ের বারমারী সাধু লিওর খ্রিষ্টান ধর্মপল্লীতে পূর্ণ মিলন, পাপ স্বীকার ও বিকেলে পবিত্র খ্রীষ্টযাগের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ তীর্থ উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। পরে রাতে আলোক শোভাযাত্রা, আরাধনা, ব্যক্তিগত প্রার্থনা, নিরাময় অনুষ্ঠান ও নিশি জাগরন অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার সকালে জীবন্ত কুশের পথ ও মহা খ্রীষ্টযাগের মধ্য দিয়ে দুই দিনের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান শেষ হয়।
দেশ-বিদেশ থেকে আগত খ্রীষ্টভক্তরা নিজেদের পাপ মোচনের জন্য মোম জ্বালিয়ে আলোর মিছিলে অংশ নেন। প্রায় ৩ কিলোমিটার পাহাড়ি ক্রুশের পথ অতিক্রম শেষে মা মারিয়ার প্রতিকৃতির সামনে সমবেত হয়ে ভক্তরা শ্রদ্ধা জানান, অকৃপণ সাহায্য দেন এবং ভালো ফলাফল, লেখাপড়া সহজ হওয়া ও নিজের মনের বাসনা পূরণের জন্য প্রার্থনা করেন।
তীর্থযাত্রী সুর্য সেন বলেন, ‘আমরা আমাদের ধর্মীয় নিয়মনীতি সঠিকভাবে পালন করতে তীর্থস্থানে আসি। ভালো কাজের জন্য প্রার্থনা করি। মোমবাতি হাতে নিয়ে পুরো তীর্থস্থান ঘুরে মা মারিয়ার কাছে আমাদের আশা জানাই। আমাদের মানত পূরণ করেন মা মারিয়া।’
দামদা মানকিম বলেন, ‘আমি যেন ভালো ফলাফল করে দেশের ও সমাজের মানুষের সেবা করতে পারি, তাই মা মারিয়ার কাছে প্রার্থনা করতে এসেছি।’
মারিয়া নকরেক বলেন, ‘আমি ক্লাস ফোরে পড়ি। মা মারিয়ার কাছে ভালো ফলাফল কামনা করতে এখানে এসেছি। মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রার্থনা করছি।’
ভক্তদের বিশ্বাস, মা মারিয়া তাদের সব চাওয়া পূরণ ও সমস্যার সমাধান করেন। তাই শিশু, যুবক ও বৃদ্ধরা প্রতিবছর এই তীর্থে ছুটে আসেন। দীর্ঘ ২৫ বছর পর এবার জুবিলি উৎসব উদযাপন করা হয় এবং এ উপলক্ষে একটি মেলা বসানো হয়েছিল।
শেরপুরের পুলিশ সুপার মো: আমিনুল ইসলাম জানান, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তীর্থ উৎসব সম্পন্ন করতে তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত ছিলেন। পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় বিজিবি টিমও সবসময় টহলে ছিল। কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ছাড়াই এবারের তীর্থ উৎসব শেষ হয়েছে।
শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘উৎসবটি দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ। হাজার হাজার খ্রীষ্টভক্ত এখানে এসেছেন। খ্রিষ্টানদের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মের মানুষও উৎসব দেখার জন্য এসেছেন। পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় ছিল এবং নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বদা তৎপর ছিল।’

খুলনা জর্জ কোটের সামনে দুজনকে গুলি করে হত্যা

খুলনা মহানগর প্রতিনিধি প্রকাশিত: রবিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:১৯ পিএম
খুলনা জর্জ কোটের সামনে দুজনকে গুলি করে হত্যা

খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান ফটকের বাইরে দিনের বেলায় সশস্ত্র হামলায় দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

রোববার দুপুর প্রায় সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন খুলনা সদর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম। নিহতরা হলেন—ফজলে রাব্বি ওরফে রাজন এবং হাসিব হাওলাদার।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, জামিনে থাকা এই দুই ব্যক্তি সেদিন আদালতে হাজিরা শেষে ফটকের সামনে মোটরসাইকেল রেখে পাশের চায়ের দোকানে দাঁড়ান। ঠিক সেই সময় চার–পাঁচজন অস্ত্রধারী হেঁটে এসে তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়।

গুলিবিদ্ধ হয়ে দুজন মাটিতে লুটিয়ে পড়লে দুর্বৃত্তরা চাপাতি দিয়ে আবারও হামলা চালিয়ে দ্রুত এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

গুলিবিদ্ধ হাসিবের ভাই শাকিল হাওলাদার জানান, সম্প্রতি একটি অস্ত্র মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে এসেছিলেন হাসিব।

খুলনা মহানগর পুলিশের খুলনা জোনের সহকারী কমিশনার শিহাব করিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জানান, হামলার কারণ ও জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।

দেবীগঞ্জে গনশুনানিতে সাধারন মানুষের অভিযোগ শুনে সমাধানের আশ্বাস দিলেন জেলা প্রশাসক

পঞ্চগড় প্রতিনিধি প্রকাশিত: রবিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৫, ৫:২১ পিএম
Shares14
অ- অ+
দেবীগঞ্জে গনশুনানিতে সাধারন মানুষের অভিযোগ শুনে সমাধানের আশ্বাস দিলেন জেলা প্রশাসক

oppo_2

আপনি কেমন জেলা প্রশাসক চান, জেলা প্রশাসকের কাছে আপনার প্রত্যাশা কি, জেলা প্রশাসকের কাছে আপনার কি কি অভিযোগ রয়েছে তা নিয়ে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে গনশুনানী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

৩০ নভেম্বর রবিবার দুপুরে দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের হলরুমে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এ গনশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট কাজী মোঃ সায়েমুজ্জামান গনশুনানীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
গনশুনানীতে জেলা প্রশাসক কাজী মোঃ সায়েমুজ্জামানের নিকট গণশুনানি কালে দেবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, জনপ্রতিনিধি, মিডিয়াকর্মী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বীরমুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলার সাধারন লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
গনশুনানীতে তারা দেবীগঞ্জে বাস টার্মিনালের অভাব, নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে থাকা খাসজমি দখল করে বসত নির্মান, সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে মাদক প্রবেশ, ভারতীয় গরু পাচার করে নিয়ে আসা, উপজেলা হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসক সংকট, নোংরা পরিবেশ, বিভিন্ন পাকা রাস্তার উপরে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করে রাখা, সীমান্তবর্তী এলাকায় চোরাকারবারি বেড়ে যাওয়া, বিভিন্ন রাস্তাঘাটের সমস্যাসহ তাদের জায়গা জমির বিভিন্ন বিষয় সমস্যা নিয়ে অভিযোগ তুলে ধরেন।
জেলা প্রশাসক কাজী মোঃ সায়েমুজ্জামান তাদের প্রত্যেকের অভিযোগ শুনে সংশ্লিষ্ট বিভাগের মাধ্যমে তার সমাধানেরও আশ্বাস দিলেন। সমাধানের ব্যাপারে তিনি সহযোগিতাও করবেন বলে জানান।
দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্ব করেন। দেবীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এ গনশুনানির আয়োজন ।
গনশুনানীতে উপস্থিত ছিলেন দেবীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাঈম মোর্শেদ, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সুমন ধর, উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুল ইসলাম, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আজমল হোসেন, উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা আমীন আহসান, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুদেব কুমার দাস, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় শাহজাদপুরে বিএনপির দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত।

মো: ইউনুছ আলী, জেলা প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ  প্রকাশিত: রবিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৫, ১:৪০ পিএম
বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় শাহজাদপুরে বিএনপির দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত।

Oplus_131072

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনায় শাহজাদপুরে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বিকেলে পৌরসভার খঞ্জনদিয়া এলাকায় ড. এম. এ. মুহিতের নিজ বাসভবনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জের উদ্যোগে এ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. এম. এ. মুহিত।
দোয়া মাহফিলকে ঘিরে বিকেল থেকেই বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, ওলামাদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষের ঢল নামে। স্থানীয় আলেমগণ মিলাদ পরিচালনা করেন এবং বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি, দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনায় বিশেষ মোনাজাত করেন। এসময় দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনাও করা হয়।
মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. এম. এ. মুহিত বলেন,
“বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা আজ দেশের মানুষের প্রার্থনা। তিনি জনগণের প্রিয় নেত্রী। আমরা তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনায় আন্তরিকভাবে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি।”
তিনি আরও বলেন,
“অসুস্থ মানুষের জন্য দোয়া করা প্রতিটি মুসলমানের দায়িত্ব। এই মাহফিল মানবিকতার একটি প্রকাশ।”
আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা জানান—
“বেগম খালেদা জিয়া আমাদের আশা, শক্তি এবং গণতন্ত্রের প্রতীক। তাঁর অসুস্থতার খবর শুনে আমরা অত্যন্ত ব্যথিত। তাঁর দ্রুত সুস্থতা কামনায় আজ আমরা সবাই একত্রিত হয়েছি। আল্লাহ যেন তাঁকে দ্রুত সম্পূর্ণ সুস্থ করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন—এটাই আমাদের আন্তরিক দোয়া।”
×